বন্ধ মোবাইল টাওয়ার চালুর দাবিতে মিরসরাইয়ে গণস্বাক্ষর ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বোরহান উদ্দিন সাদিক
"সংযুক্ত হোক যোগাযোগ, জেগে উঠুক অধিকার, নেটওয়ার্ক সুবিধা আমাদের আইনসংগত অধিকার" — এই স্লোগানকে সামনে রেখে বন্ধ হয়ে যাওয়া রবি মোবাইল টাওয়ার পুনরায় চালুর দাবিতে মিরসরাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, আলোচনা ও পরামর্শ সভা।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম সোনাই কয়লা শহীদ জাকির হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সভার আয়োজন করা হয়। তরুণ সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন মাষ্টার মোহাম্মদ রাসেল।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডাক্তার ইউছুফ ও জসিম মাস্টার। পরামর্শমূলক বক্তব্য দেন আব্দুল আলিম, মোঃ শাহজাহান, আনোয়ার হোসেন, শাহাদাত হোসেন, আবুল বশর, আব্দুল কাদের, আব্দুল হাই, আহসান উল্লাহ, নুরুল ইসলাম সুমন ও সোহাগ হোসেনসহ অন্যান্যরা।
সভায় বক্তারা জানান, করেরহাট ইউনিয়নের মোল্লার বাগান টিলায় ২০১৪ সালে স্থাপিত হওয়া রবি মোবাইল টাওয়ারটি ২০১৮ সাল পর্যন্ত সচল ছিল। এরপর থেকে টাওয়ারটি বন্ধ থাকায় এলাকার প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এর ফলে শিক্ষাসহ স্বাস্থ্যসেবা, কৃষিকাজ, অর্থনৈতিক লেনদেন ও পারিবারিক যোগাযোগে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধা জনগণের একটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ ও ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জীবনের অধিকার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নেটওয়ার্ক সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই টাওয়ারটি পুনরায় চালুর জন্য বনবিভাগ ও সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর কোম্পানির জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
উল্লেখযোগ্য যে, রবি টাওয়ারটির নেটওয়ার্কের আওতায় থাকা অন্তত ৪০টিরও বেশি গ্রামের বাসিন্দারা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে রয়েছে নয়টিলা, নলখো, সাইবেনিরখিল, ত্রিপুরা পাড়া, ইসলামপুর, কয়লা, মোহাম্মদপুর, জিলতলী, সুবলছড়ি, ফটিকছড়ির বালুটিলা, কাজীপাড়া, বান্দরমারা, বৈদ্দ্যেরথলীসহ আরও বহু গ্রাম।
অনুষ্ঠানে প্রায় ১,০০০ ভুক্তভোগী উপস্থিত ছিলেন এবং সাড়ে ৩ শতাধিক সচেতন নাগরিক গণস্বাক্ষরে অংশগ্রহণ করেন। আয়োজকরা জানান, এই গণস্বাক্ষরসহ একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর জমা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার কথাও জানান তারা।
বক্তারা বলেন, “আমরা এই দেশের নাগরিক, রোহিঙ্গা নই। জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে স্বীকৃত। এখানে সরকারি স্কুল, রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও একটি মোবাইল টাওয়ার সচল না থাকার কারণে জনজীবনে এমন দুর্ভোগ মেনে নেওয়া যায় না।”